ফ্রেন্ডসভিউ প্রেজেন্টস টেলিপ্রেস স্টার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাজেদা হক

বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধ-নারী-অধিকার বিষয়ক গবেষণা এবং সাংবাদিকতায় সেরার পুরস্কার পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাজেদা হক। মঙ্গলবার হোটেল রিজেন্সীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেধাবী এ সাংবাদিককে সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্র এম এ খালেক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টেলিপ্রেসের সিইও, বাংলাদেশ-আমেরিকা চেম্বার অভ কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, সাংবাদিক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রাজু আলীম।

অত্যন্ত আনন্দের অনুভূতি। কাজের স্বীকৃতি সব সময়ই অনুপ্রেণাদায়ক জানিয়ে সাহসী এ সাংবাদিক বলেন, পুরস্কার কাজের দায়বোধকে বাড়িয়ে দেয়। তাই দেশের উন্নয়ন এবং ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে তার কলম এবং কদম পিছপা হবে বলেও প্রতিবেদককে জানান এই পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক। পুরস্কারটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করা সাহসী সব নারীদের জন্য উৎসর্গ করেন তিনি।

বাংলাদেশে মিটু# মুভমেন্টে নেতৃত্ব দানকারী সাংবাদিক সাজেদা হক নানা সময়ে সহকর্মী দ্বারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হলেও অত্যন্ত সাহসীকতার সাথে তা মোকাবেলা করেছেন তিনি। বর্তমানে এন্টি-সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট অর্গানাইজেশন (আসো) এর প্রেসিডেন্ট তিনি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি যেকোন ধরণের নিপীড়নের বিরুদ্ধে কাজ করবে জানিয়ে সংগঠন প্রধান বলেন, যৌন নিপীড়নের শিকার হন অনেকেই কিন্তু অভিযোগ সকলেই করতে পারেন না। যারা অভিযোগ করতে পারেন তারা সাহসী, আর সব সাহসীদের পাশেই থাকবে এন্টি-সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট অর্গানাইজেশন (আসো)।

অভিজ্ঞ এই সাংবাদিকের জন্ম নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নে। বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হকের বড়কন্যা মেধাবী এই সাংবাদিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাপান স্টাডিজে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী মেধাবী এ সাংবাদিক বর্তমানে ড. ওয়াজেদ মিয়া রিসার্স ইনস্টিটিউট, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক ফেলো (এমফিল লিডিং টু পিএইচডি)। তাঁর গবেষণার বিষয়: গণমাধ্যমে যৌন নিপীড়নঃ প্রেক্ষিত বাংলাদেশ।

এবারের বইমেলায় সাজেদা হকের তিনটি বই পাওয়া যাচ্ছে। গবেষণাধর্মী বই সভায় ও সেবায় বঙ্গবন্ধু-এ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সব কয়টি ভাষনকে একত্রিত করেছেন, সংযুক্ত করেছেন ২২টি টিঠি এবং জাতির পতিার সব সেবামূলক কাজকে মলাটবন্দী করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ, অর্ধেক তাঁর করিয়াছে নারী, অর্ধেক তাঁর নর- বইটিতে ৫০ জন নারী এবং ৫০ জন পুরুষ বীর মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধকাহিনীকে সন্নিবেশিত করেছন এবং ছোটগল্পের সংকলন নেশায় স্থান পেয়েছে মোট ১৩টি গল্প। প্রকাশনী কালো’র স্টলে পাওয়া যাবে বইগুলো।

প্রতিবাদী সাংবাদিক সাজেদা হক পেশা জীবন শুরু করেন ১৯৯৩ সালে বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম দিয়ে। এইচএসসি পাশ করেই যোগ দেন ব্রাকের হেল্থ এন্ড পপুলেশন ডিভিশনে ময়মনসিংহ বিভাগে। ১৯৯৬ সালে। ২০০০ সালে যোগ দেন দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টে। ২০০৪ এ অমর্ত্য সেনের দেয়া সালমা সোবহান ফেলোশীপ জিতে সাংবাদিকতা শুরু করেন। বছরব্যাপী চলা এ ফেলোশীপে তিনি প্রথম আলোর একজন ফেলো লেখক হিসেবে উন্নয়নমূলক বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

ফেলোশীপ চলাকালীন সময়েই যোগ দেন দৈনিক দেশবাংলা পত্রিকায়। সেখানে নিজে রিপোর্টিং করতেন। সেই সাথে দেখতেন উন্নয়নমূলক ফিচার পাতা সিঁড়ি, ঢাকার জীবন এবং আমাদের বিদ্যালয়। ২০০৭ সাথে যোগ দেন একুশে টেলিভিশনে, রিপোর্টার হিসেবে। ২০০৯ সালে সম্প্রচারের অপেক্ষায় থাকা যমুনা টেলিভিশনে যোগ দেন। প্রথম দফায় চ্যানেলটি বন্ধ হলে ২০১০ সালে যোগ দেন বৈশাখী টেলিভিশনে। ২০১৪ সালে যোগ দেন রেডিও ধ্বনিতে। বর্তমানে দেশইনফো.কম.বিডি এবং পাক্ষিক বাংলাদেশের সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। কাজ করছেন গবেষক হিসেবেও।

অনুষ্ঠানে সাজেদা হক ছাড়াও পুরস্কার গ্রহণ করেন, পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী, প্রিয়তা ইফতেখার, পরীমনি, সায়মান সাদিক, প্রিয়মনি, মীম, আরফান নিশো, মেহজাবীন, নীরব, তৌহিদ আফ্রিদি, লুইপা, সুমাইয়া বৃষ্টি, এসকে মিডিয়া, উপস্থাপক সানজীদা পারভীন, মৌটুসী মৌসহ আরো অনেকে।

সদ্য প্রকাশিত

সম্পর্কিত পোস্ট