ভারতে করোনার সক্রিয় রোগীর চেয়ে সুস্থ বেশি

মহামারি নভেল করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের নাম রয়েছে উপরের দিকেই। গতকাল যুক্তরাজ্যকে টপকে বিশ্বে করোনা আক্রান্ত শীর্ষ দেশের তালিকায় চতুর্থ স্থানে চলে গেছে দেশটি। তবে সেখানে এখন সক্রিয়ভাবে যতজন মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রয়েছেন তার চেয়ে সুস্থ মানুষের সংখ্যাই বেশি।

ভারতে আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ হওয়ার বিষয়টি আশাব্যঞ্জক। ভারতে কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন। মারা গেছে ৮ হাজার ৪৯৮ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ১৯৫ জন রোগী। আর শনাক্ত হওয়ার পর এখনো আক্রান্ত রয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৮৪২ জন।

তবে ভারতে মহামারি করোনার সংক্রমণ হু হু করে যে বাড়ছেই তার প্রমাণ অবশ্য মিলছে প্রতিনিয়ত। শীর্ষ আক্রান্ত দেশগুলোকে প্রায় প্রতিদিনই ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রথমবারের মতো ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ দশ হজার রোগী শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাজ্যকে টপকানোর পর ভারতের উপরে আছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও রাশিয়া।

দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো দেশে সক্রিয় রোগীর চেয়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত সুস্থ মানুষের সংখ্যা বেশি রয়েছে। আক্রান্তে শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্র রাজ্যে সুস্থ মানুষের সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি। সেখানে শনাক্ত মোট রোগীর ৪৬ হাজারের বেশি সুস্থ হয়েছে। আর সক্রিয় রয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার জন।

তবে আক্রান্তের চেয়ে সুস্থ মানুষের সংখ্যা বেশি হলেও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে শঙ্কাই কাজ করছে বেশি। কেননা গত ২৪ মে থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অর্থাৎ আক্রান্ত ও মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ওইদিন শীর্ষ আক্রান্তে দশম স্থানে থাকলেও তার ১৮ দিনের মাথায় ভারতের সেই অবস্থান এখন চতুর্থ।

দ্রুত সংক্রমণ শুরুর পথে দেশটি টপকে যায় চীনকে; গত ডিসেম্বরের শেষদিকে এই চীনের উহান থেকেই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল। এছাড়া চীনের পর ভাইরাসটি সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল ইতালি ও স্পেনকেও ছাড়িয়ে যায় ভারত। পেছনে পড়ে যায় জার্মানি, ফ্রান্স, তুরস্ক ও ইরানও।

প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ২৫ মার্চ লকডাউন ঘোষণা করে মোদি সরকার; তখন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। এরপর লকডাউন জারি ছিল যেকোনো দেশের চেয়ে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে। তবুও ভাইরাসটির সংক্রমণ রুখতে পারেনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল এই দেশটি।

বিশেষ করে গত কয়েক সপ্তাহ তো ছিল ভয়াবহ। প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার মানুষ শনাক্ত হচ্ছেন। তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে একদিনে। করোনা সংক্রমণের বড় হটস্পট মাহরাষ্ট্র। রাজ্যটিতে আক্রান্ত ৯৭ হাজার ৬৪৮ জন শনাক্ত হয়েছেন। মহরাষ্ট্রের পর যথাক্রমে রয়েছে তামিলনাডু ও দিল্লি।

প্রকোপ ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করলেও গত এপ্রিল থেকেই লকডাউন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করতে শুরু করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও লকডাউন পঞ্চম দফায় আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত জারি রয়েছে কিন্তু এই লকডাউন চলছে অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে।

সদ্য প্রকাশিত

সম্পর্কিত পোস্ট